ঢাকা,সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া সদরের অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের যোগসাজসে সিংহভাগ মুদির দোকান পেঁয়াজ নেই !

লাবণ্য রাণী পূজা, নিজস্ব প্রতিবেদক ::  চকরিয়া সদরের অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও কমিশন এজেন্টের কারসাজিতে পেঁয়াজের বাজার এখন অস্থির। বেশিরভাগ বাজার এখন পেঁয়াজ শূণ্য। গুটিকয়েক দোকানে নামমাত্র পেঁয়াজ থাকলেও ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৯০ টাকা থেকে ১০০টাকা ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা করে বিক্রয় হচ্ছে।অসাধু সিন্ডিকেট দোকানের সামনে অপরাপর পণ্যের সাথে পেয়াজ না থাকলেও চাহিদা মতো টাকা পেলে আড়াল থেকে পেয়াজ বিক্রি করা হচ্চে চড়া দামে।

স্থানীয় প্রশাসন পেঁয়াজের মূল্য কমাতে নানা নির্দেশনার পাশাপাশি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করলেও হচ্ছে হিতে বিপরীত। অনেক ব্যবসায়ী বেশি দামে কিনে আনা পেঁয়াজ অতিরিক্ত লোকসান দিয়ে বিক্রয় করতে নারাজ। ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে বাগবিতন্ডা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

গতকাল সন্ধ্যায় কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরশহরের বিভিন্ন দোকানে সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ছোট-বড় সিংগভাগ শূীধল দোকানেই পেঁয়াজ নেই। কয়েকটিতে নামমাত্র পেঁয়াজ থাকলেও বিক্রয় করছেননা ব্যবসায়ীরা । ক্রেতাদের দাবির মুখে কয়েকটি দোকানে পেঁয়াজ বিক্রয় করলেও ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা এবং মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৭০-৮০ টাকা কেজি ধরে চাওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে বাগবিতন্ডা হয়।

কাঁচাবাজার সড়কের পাইকারী ব্যবসায়ীরা  বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জ থেকে কেজি ৮৫ টাকা মূল্যে কিনতে হচ্ছে বিধায় পেঁয়াজ বিক্রয় বন্ধ করে দিয়েছি।

একই সড়কের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম কয়েকদিক আগে ৮০ টাকা ধরে কিনে আনা পেঁয়াজ ৮৫ টাকা মূল্যে বিক্রয় করায় ক্রেতার গালিগালাজ শুনতে হয়েছে।

অনুরুপভাবে হক এন্ড ব্রাদার্স কেজি প্রতি ৮৪ টাকা ধরে কিনে ৮৬ টাকা মূল্যে বিক্রয় করায় নাজেহাল হতে হয়েছে। এবস্থায় স্বল্প পরিমাণ পেঁয়াজ থাকা দোকান মালিকরাও পেঁয়াজ বিক্রয় করছেনা।

উপজেলার গ্রামীণ এলাকার দোকানগুলোতে সপ্তাহখানেক পূর্বে ক্রয় করা পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করছে। মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি পেঁয়াজ সংকটের কারণে শতশত ঘরে পেঁয়াজ খাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে গত পনেরদিনে ৮ হাজার ৪৯৭ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। এই নি¤œমানের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা মিয়ানমান থেকে আমদানি করে টেকনাফ স্থল বন্দরে পৌছাতে ১০দিন সময় লাগে।

ওইসময় এক-তৃতীয়াংশ পেঁয়াজ পচে যায়। ফলে পঁচে যাওয়া পেয়াজের দামসহ বিক্রয়যোগ্য পেঁয়াজের সাথে সামঞ্জস্য করতে গিয়ে বাড়ছে দাম। এছাড়াও মিয়ানমার থেকে আনা পেঁয়াজ চট্টগ্রাম হয়ে ফের চকরিয়ায় আনতে হওয়ায় পরিবহণ খরচও বাড়ছে।

আর ভারতীয় পেঁয়াজ মোটা হওয়ায় মেজবান ও হোটেল কেন্দ্রিক বিক্রয় হলেও গৃহস্থালিতে বিক্রয় হচ্ছেনা। ওই পেঁয়াজ খাতুনগঞ্জ থেকেই কিনতে হচ্ছে ৮৫ টাকা মূল্যে। ফলে পরিবহণ খরচসহ যোগ করে বিক্রয় করতে হচ্ছে অধিক মূল্যে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, মিয়ানমারের পেঁয়াজ চট্টগ্রামে না নিয়ে কক্সবাজারের বিপনন করলে সর্বোচ্চ ৫০-৫৫ টাকা মূল্যেই প্রতি কেজি বিক্রয় করা যেত।

এব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান চকরিয়া নিউজকে বলেন, ইতিপূর্বে জেলা প্রশাসন পেঁয়াজের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলো। বর্তমানে পাইকারী বাজারে পেঁয়াজের মূল্য কতটুকু উঠানামা করেছে খোঁজ নিয়ে জেলা প্রশাসনের পরামর্শক্রমে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নতুন নির্দেশনা দেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, পেঁয়াজ সংকট কাটাকে তড়িৎ উদ্যোগ নেয়া হবে। কোন ব্যবসায়ী ও ক্রেতা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় উভয়দিক বিবেচনা পূর্বক ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ত্বড়িৎ ব্যবস্থা নেব।

পাঠকের মতামত: